দুইটি পরমাণুর মধ্যে ইলেকট্রন আদান-প্রদানের মাধ্যমে তড়িৎযোজী বন্ধন এবং ইলেকট্রন শেয়ারের মাধ্যমে সমযোজী বন্ধন গঠিত হয়। কিন্তু এমন একটি বন্ধন আছে যেখানে, অণু গঠনের সময় একটি পরমাণুই বন্ধন সৃষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় ইলেকট্রনযুগল প্রদান করে এবং অপর পরমাণু কোনো ইলেকট্রন না দিয়ে তা সরবরাহকারী পরমাণুর সাথে সমানভাবে শেয়ার করে। এভাবে সৃষ্ট বন্ধনই হচ্ছে সন্নিবেশ বন্ধন।
দুটি পরমাণুর মধ্যে সমযোজী বন্ধন সৃষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় ইলেকট্রন যুগল একটিমাত্র পরমাণু কর্তৃক যোগান দিয়ে এবং অপর পরমাণু তা সমভাবে শেয়ারের মাধ্যমে যে বন্ধনের সৃষ্টি হয় তাকে সন্নিবেশ বন্ধন বলে।
অ্যামোনিয়া (NH3) ও বোরন ট্রাই ফ্লোরাইড (BF3) এর মধ্যে সন্নিবেশ বন্ধন দ্বারা অ্যামোনিয়া বেরোফ্লোরাইড উৎপন্ন হয়।
সন্নিবেশ বন্ধন প্রকৃতপক্ষে একটি বিশেষ ধরনের সমযোজী বন্ধন। এজন্য সন্নিবেশ বন্ধনযুক্ত যৌগসমূহ প্রকৃতপক্ষে সমযোজী বন্ধনযুক্ত যৌগের ধর্ম প্রদর্শন করে।
সন্নিবেশ বন্ধন গঠনের শর্ত
সন্নিবেশ বন্ধন গঠনের শর্তসমূহ নিম্নরূপ–
(i) দুটি পরমাণুর মধ্যে দাতা পরমাণুটির যোজ্যতা কক্ষে অবশ্যই একটি নিঃসঙ্গ ইলেকট্রন জোড় (Lone pair of electrons) থাকতে হবে।
(ii) ঐ ইলেকট্রন জোড়কে গ্রহণ করার জন্য গ্রহীতা পরমাণুর বহিস্থ কক্ষে অন্তত একটি ফাঁকা অরবিটাল থাকা প্রয়োজন।
(iii) দাতা পরমাণুর ইলেকট্রন জোড় গ্রহীতা পরমাণুতে সম্পূর্ণরূপে স্থানান্তরিত হবে না, বরং দাতা ও গ্রহীতা উভয় পরমাণুই ঐ ইলেকট্রন জোড়কে ব্যবহার করবে।
আরো পড়ুনঃ-
১। s ব্লক মৌল, p ব্লক মৌল এবং d ব্লক মৌল কাকে বলে?
২। নাইট্রোজেনের যোজনী ও যোজ্যতা ইলেকট্রন ভিন্ন কেন?
৩। অরবিটাল সংকরণ কাকে বলে? অরবিটাল সংকরণ কত প্রকার ও কি কি?
৪। যৌগমূলক কি? যৌগমূলকের উদাহরণ।
৫। মুক্তজোড় ইলেকট্রন ও বন্ধন জোড় ইলেকট্রন কাকে বলে?
৬। সন্নিবেশ বন্ধন কাকে বলে? সন্নিবেশ বন্ধন গঠনের শর্ত কি কি?